মানহানিকর বক্তব্যের প্রতিবাদে কাউন্সিলরের সংবাদ সম্মেলন।
বি এ রায়হান, গাজীপুরঃ --- গাজীপুর সিটি করপোরেশন বরখাস্তকৃত মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের দেওয়া মানহানিকর বক্তব্যের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ৫ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর দবির উদ্দিন সরকার। রোববার (১৯ মার্চ) বিকেলে কাশিমপুর সূরাবাড়ী এলাকায় তার নিজ কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন,গত শনিবার (১৮ মার্চ) জহুরা বেগম স্কুলে বার্ষিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দিতে গিয়ে বরখাস্তকৃত মেয়র জাহাঙ্গীর আলম আমার পরিবার ও আমাকে নিয়ে এবং আওয়ামী পরিবারের সম্মানিত ব্যক্তিদেরকে নিয়ে বিভিন্ন রকমের বাজে মন্তব্য করে বক্তব্য দিয়েছেন। যা আমার পরিবার ও আমার দৃষ্টি গোচর হয়েছে এবং আমার পরিবারের সম্মানহানি হয়েছে। যদি তার দেওয়া বক্তব্য প্রত্যাহার করা না হয় তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। লিখিত বক্তব্যে তিনি আরো বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মহান মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে বাজে মন্তব্য করার অপরাধে গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক পদ থেকে বহিষ্কার ও গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত হয়েছেন সেই বরখাস্তকৃত মেয়র জাহাঙ্গীর আলম গাজীপুর বিভিন্ন অনুষ্ঠানে গিয়ে আওয়ামী পরিবারের সম্মানিত ব্যক্তিদের সম্মানহানি করে বক্তব্য দিচ্ছেন এটা দু:খ জনক। তিনি বলেন, আমার দাদা মরহুম সবেদ আলী সরকার দীর্ঘ দিন কাশিমপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন এবং সাভার থানা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন এবং আমার বাবা মরহুম গিয়াস উদ্দিন সরকার কাশিমপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন এবং বঙ্গবন্ধুর অত্যান্ত ঘনিষ্ঠ ছিলেন। আমার বড় ভাই শওকত হোসেন সরকার কাশিমপুর ইউনিয়ন পরিষদের ১১ বছর চেয়ারম্যান হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন। আমার ছোট ভাই কবির হোসেন সরকার আশুলিয়া থানা আওয়ামী যুব লীগের আহবায়ক হিসাবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন এবং আমি দবির সরকার গাজীপুর মহানগর ৫ নং ওয়ার্ডের পর পর দুই বার নির্বাচিত কাউন্সিলর এবং কাশিমপুর থানা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হিসাবে দায়িত্ব পালন করে আসছি। সংবাদ সম্মেলনে উল্টো জাহাঙ্গীর আলমকে প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে কাউন্সিলর বলেন, আপনার দাদা কি ছিলেন? আপনার বাবা কি ছিলেন? আপনি মেয়র হওয়ার আগে কি ছিলেন? আপনার বংশের পরিচয় কি? আপনার সৎ সাহস থাকলে মিডিয়ার সামনে আপনার পরিচয় তুলে ধরবেন। আমরা গাজীপুর বাসী জানি আপনার বাবার বাড়ী কালীগঞ্জ। আপনার বাবা কানাইয়া গ্রামে ঘর জামাই ছিলেন। আপনি মামার বাড়ী আশ্রিত ছিলেন । আপনার বাবা মরহুম মিজানুর রহমান ও আপনি নিজে কানাইয়া বাজারে ঠোঙ্গা বিক্রেতা ছিলেন। সেসময় আপনি ঠোঙ্গা জাহাঙ্গীর নামে পরিচিত ছিলেন। আপনি জাহাঙ্গীর আলম উল্কা সিনেমা হলে টিকিট কালোবাজারি করতেন। চৌরাস্তা আরিফ ইলেকট্রনিক্স দোকানে কর্মচারী হিসাবে ছিলেন। এছাড়াও ৯ কেজি গান পাউডার নিয়ে জিএমবি মামলায় জেল খেটেছেন। জুট ব্যবসার নামে ফ্যাক্টরির দামি দামি জিনিসপত্র চুরি করে অনেক ফ্যাক্টরি ধ্বংস করে দিয়ে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। তার বাস্তব উদাহরন কোনাবাড়ীর এনটিকেসি ফ্যাক্টরি। তারপর আপনি মানুষের সাথে বাটপারি করে এবং অসহায় মানুষকে ধ্বংসের পথে ঠেলে দিয়ে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। তারপর আপনি মানুষের আত্নসাৎ এর টাকা দিয়ে নির্বাচন করে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র হয়েছেন। মেয়র হয়ে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতি করে মানুষের কাছে সমালোচনার পাত্র হয়েছেন এবং আপনার নামে মামলা চলমান রয়েছে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মহান মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কুটুক্তি করে দল থেকে বহিষ্কৃত হয়েছেন এবং অনিয়মের কারনে মেয়র পদ হারিয়েছেন। সবকিছু হাড়িয়ে এখন আপনি উন্মাদের মত আবোল তাবোল বলছেন। যেখানে সেখানে গিয়ে সম্মানিত লোকদের অস্মান করে কথা বার্তা বলে আপনি যে আগে ঠোঙ্গা জাহাঙ্গীর বা টোকাই জাহাঙ্গীর নামে পরিচিত ছিলেন সেই পরিচয় আবার নিজেই তুলে ধরছেন। আপনি শান্তিপ্রিয় গাজীপুর বাসীকে অশান্ত করার মিশনে নেমেছেন। পরিশেষে তিনি বলেন, অনতিলম্বে পরিবারের উপর বাজে মন্তব্য করে যে বক্তব্য দিয়েছেন তাহা প্রত্যাহার করে ক্ষমা না চাইলে আমি আপনার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবো। সংবাদ সম্নেলনে বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ার সংবাদ কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।